পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন প্রণয়নের পুরো প্রক্রিয়া ‘ডিজিটাল’ পদ্ধতিতে সম্পন্ন করার প্রস্তাব দিয়েছে এইচএসসির প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি।
এছাড়া কোন সেট প্রশ্নে পরীক্ষা হবে তা পরীক্ষার দিন সকালে লটারির মাধ্যমে নির্ধারণেরও প্রস্তাব করা হয়েছে।
রোববার দুপুরে সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের কাছে প্রতিবেদন তুলে দেন তদন্ত কমিটির প্রধান ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্তি সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) সোহরাব হোসাইন।
সোহবার জানান, প্রশ্ন ফাঁসরোধে প্রধান চারটি সুপারিশ ছাড়াও বেশকিছু সুপারিশ করা হয়েছে। তবে অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে এখনই সবগুলো সুপারিশ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।
“আমরা প্রতিবেদন জমা দিয়েছি, এখন সরকার চিন্তা করবে তারা কোনটি গ্রহণ করবে বা বিভিন্ন সুপারিশের মিশ্রণ করবে কি না?”
প্রশ্নপত্র প্রণয়নে প্রযুক্তির ব্যবহারকে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে জানিয়ে সোহরাব বলেন, “এটা হবে ইন্টারনেট-নির্ভর। অর্থাৎ সবগুলো কেন্দ্রে ইন্টারনেট, ডিজিটাল প্রিন্টার ও বিদ্যুৎ থাকতে হবে।
“লোকালি প্রশ্ন প্রিন্ট হলে তার নিরাপত্তাও নিশ্চিত করেত হবে। এতে প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার সম্ভবানা থাকবে না। এজন্য অবকাঠামো ডেভেলপ করতে হবে।”
বেশি সেট প্রশ্ন ছাপানোর সুপারিশ করা হয়েছে জানিয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান বলেন, এই সেটগুলো থানা বা ব্যাংকে রাখা হবে। পরীক্ষার দিন সকালে লাটারির মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে কোন সেটে পরীক্ষা হবে।
সোহবার জানান, তদন্তের সময় শিক্ষাবিদ, ব্যবস্থাপক ও আইটি বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্টদের মতামত নেয়া হয়েছে। প্রশ্নফাঁসরোধে সবাই মিলে বসে সূদুরপ্রসারী কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে।
তদন্ত কমিটির সপারিশগুলোকে কাজে লাগাতে শিগগিরই বসবেন জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “কি ব্যবস্থা নিচ্ছি সে বিষয়ে আপনাদের (সাংবাদিক) জানানো হবে।”
এইচএসসির ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রের প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর গঠিত এই কমিটি প্রশ্নফাঁসে জড়িত কাউকে সনাক্ত করতে পারেনি বলেও জানান অতিরিক্ত সচিব।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “জড়িতদের সনাক্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের সহায়তা চাওয়া হয়েছে, তারা কাজ করছেন।”
প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর গত ৯ এপ্রিল ঢাকা বোর্ডের এইচএসসির ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
পরদিন সোহরাব হোসাইনকে প্রধান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরে এই কমিটি কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে নেয়।
এই কমিটিকে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের সার্বিক বিষয় তদন্ত করে এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সব পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ দিতে বলা হয়েছিল।
এইচএসসির প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক আব্দুস সালাম হাওলাদারের নেতৃত্বে গঠিত আরেকটি কমিটি তাদের প্রতিবেদন গত ১৮ মে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে জমা দিয়েছে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তাসলিমা বেগম এ বিষয়ে বলেছিলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাতে পেলেই এ বিষয়ে কাজ করা হবে।
Source: BDNEWS24.com